” মহাদেবের সহিত বিবাহ হইবার পরে এই কালী কি করিয়া গৌরী হইলেন এই বিষয়েও একটি অদ্ভুত উপাখ্যান দেখিতে পাই। একদিন পার্বত্যবন প্রদেশে স্বর্গীয় অপ্সরাগণ ক্রীড়া করিতেছিলেন, তাঁহাদের সম্মুখেই শিব ব্যঙ্গ করিয়া দেবীকে ‘কালি ভিন্নাঞ্জনশ্যামে’ বলিয়া আহ্বান করিয়াছিলেন। দেবী কালী তাহাতে নিজেকে অপমানিতা মনে করিয়া মর্মাহতা হইলেন এবং সেই হইতে সংকল্প গ্রহণ করেন যে, যে-পর্যন্ত দেহে স্বর্ণগৌরতা লাভ না করেন সে-পর্যন্ত আর শিবের সহিত মিলিত হইবেন না । তাহার পরে কালী দীর্ঘদিন হিমালয়ের এক নির্জন প্রান্তে গিয়ে কঠোর তপস্যা করেন— সেই তপস্যার দ্বারা তিনি গৌর অঙ্গ লাভ করিয়া গৌরী হইয়া উঠিলেন। এই গৌরীরূপে তিনি শিবের সহিত মিলিত হইয়া উভয়ে মিলিয়া অর্ধনারীশ্বর রূপ পরিগ্রহ করিলেন। এই সকল কিংবদন্তী এবং উপাখ্যান বাংলাদেশে শক্তিসাধনার কেন্দ্রে কালীর ক্রমপ্রাধান্যলাভের ইতিহাসেরই তথ্য সরবরাহ করে । ইহার সহিতই আমরা লক্ষ্য করিতে পারি, খ্রীষ্টীয় সপ্তদশ শতক হইতে বাংলাদেশে যাঁহারা শক্তিসাধক, কালী তারা প্রভৃতিই তাঁহাদের মুখ্য আশ্রয় ।”
— শ্রী শশিভূষণ দাশগুপ্ত
Reviews
There are no reviews yet.